মোঃ জাহিদুল ইসলাম (গাজীপুর প্রতিনিধি)
গুজরাট, ভারত: ভারতের গুজরাটে রমজান মাসে গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগে মুসলিমদের ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন। সামান্য একটি অভিযোগের ভিত্তিতে বহু মুসলিম পরিবারকে এক রাতের মধ্যে নিঃস্ব করে দেওয়া হয়েছে। অথচ, এই ঘরগুলোর নির্মাণে মানুষের বছরের পর বছর শ্রম ও সঞ্চয় ব্যয় হয়েছে।
ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে লক্ষ্যবস্তু মুসলিমরা?
ভারতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক নিপীড়ন নতুন কিছু নয়। কিন্তু রমজান মাসের মতো পবিত্র সময়ে গুজরাট প্রশাসনের এই অন্যায় পদক্ষেপ মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তদের বাড়িঘর রাতারাতি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়, অথচ আদালতের কোনো রায় বা আইনগত নোটিশ দেওয়া হয়নি।
সাম্প্রদায়িক বৈষম্য ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে মুসলিমদের টার্গেট করে বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যে বুলডোজার রাজনীতির নামে মুসলিমদের বসতবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। এটি মূলত মুসলিম সম্প্রদায়কে ভয় দেখানো ও দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানানোর একটি গভীর ষড়যন্ত্র।
মানবাধিকারের লঙ্ঘন ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার পরেও ভারতের প্রধানধারার গণমাধ্যমগুলো নিরব। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই ধরনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, ‘‘ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে মানুষকে টার্গেট করে তাদের বাড়িঘর ধ্বংস করা একটি জাতিগত নিধনের সূচনা।’’
ভারতীয় মুসলিমদের নিরাপত্তা কোথায়?
প্রশ্ন ওঠে, ভারতের সংবিধানে যখন সকল নাগরিকের সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে, তখন মুসলিমদের ঘরবাড়ি কেন এভাবে ভেঙে ফেলা হয়? কেন শুধুমাত্র একটি সম্প্রদায়ের মানুষই বারবার অন্যায়ের শিকার হয়?
প্রতিবাদ ও আহ্বান
আমরা বিশ্বের সকল মানবতাবাদী মানুষ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই—ভারতীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে চলমান এই রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। এটি শুধু ভারতের নয়, বরং গোটা মুসলিম বিশ্বের জন্যই একটি বিপজ্জনক ইঙ্গিত।
সংহতি গড়ে তুলুন, প্রতিবাদে সোচ্চার হোন!
ভারতের মুসলিমদের জীবন আজ অনিরাপদ। রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। আজ যারা চুপ থাকবে, কাল তাদের দিকেও বুলডোজার এগিয়ে আসবে।