দেওয়ানগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে রেকর্ডীয় ও ভোগদখলকৃত জমি জবরদখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার পাররামরামপুর ইউনিয়নের মাঠেরঘাট গ্রামের আব্দুল হক, আব্দুল বারি, মহিউদ্দিন, শরিফুল ইসলাম ও আব্দুল মতিনসহ সংঘবদ্ধ একটি চক্রের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন ওই গ্রামের মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক বিচার দাবিতে আদালতে দশ জনকে আসামী করে ২০২৩ সালের ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনে মমলা করেন।
সিরাজুল ইসলামের দাবি, ১৯৭২ সালে তিনি ওই গ্রামের হালিমুন নেছার কাছ থেকে আরওআর ৪৮৩৮ খতিয়ানভূক্ত ২৮৬৬ নম্বর দাগে ৩৩ শতক জমি রেজিষ্ট্রি মূলে ক্রয় করেন। ওই দাগে মোট জমির পরিমাণ ছিল ৭১ শতক। বাকি ৩৮ অন্য এক জনের কাছে বিক্রি করে ওই দাগের মোট জমির স্বত্ব ত্যাগ করেন হালিমুন নেছা। আরওআর জরিপে সিরাজুল ইসলামের ক্রয়কৃত ৩৩ শতক জমির মধ্যে ১১ শতক জমি রেকর্ডভূক্ত হয়। বাকি ২২ শতক খাস খতিয়ানে চলে যায়। কিন্তু পাশের ২২ শতক দাগ খতিয়ানহীন ছুট জমি সিরাজুল ইসলামের নামে বিআরএস রেকর্ডভূক্ত হয়। যার বিআরএস খতিয়ান ৫৪৫৫ এবং দাগ নম্বর ১৬৬০০। সেই জমি সিরাজুল ইসলাম দীর্ঘ দিন থেকে ভোগ দখল করে আসছেন। অভিযুক্তরা কোনো বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই জোরপূর্বক ওই জমি বেদখল করার পাঁয়তারা করেন এবং ওই জমির একাংশে সুপারি গাছের চারা লাগান।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ভাবে সালিশ মিমাংসা হয়। তাতে সিরাজুল ইসলামের প্রতিপক্ষ কোনো দলিলপত্র দেখাতে পারে না। বিচারকগণ রেকর্ডমূলে সিরাজুল ইসলামের দাবি মেনে রায় ঘোষণা করে আপোস মিমাংসা করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ সে আপোস মিমাংসা না মেনে ওই জমি জবরদখলে গেলে সিরাজুল ইসলাম আদালতে দশ জনকে আসামী করে ২০২৩ সালের ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনে মমলা করেন। মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিআরএস ৫৪৫৫ খতিয়ানভূক্ত ১৬৬০০ নম্বর দাগের জমিটি আমার নামে রেকর্ড হয়েছে। সেই জমি আমি কয়েক ঘুগ ধরে ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু প্রতিপক্ষ অন্যায় ভাবে আমার সেই জমি দখলে গিয়েছেন। আদালতে মামলা করেছি। আইনের কাছে আমি সুবিচার চাই।
প্রতিপক্ষ আব্দুল হক বলেন, ওই জমির মালিক আমার দাদি হালিমুন নেছা সিরাজুলের কাছে ৩৩ শতক জমি কওলা দেন। সেই জমি ব্যতিত বাড়তি ২২ শতাংশ জমি সিরাজুল ইসলাম তার নামে রেকর্ড করে নিয়েছেন। ওয়ারিশ হিসেবে ওই জমির আমরা পাব।
স্থানীয় মাতবর সাদেকুল ইসলাম লাল মিয়া বলেন, নালিশী জমিটির রেকর্ডমূলে বর্তমানে মালিক সিরাজুল ইসলাম। বিষয়টি মিমাংসার জন্য এলাকার সবাই বৈঠক করেছেন। কিন্তু বিষয়টি মিমাংসা হয়নি।
মাওলানা মাসুদুর রহমান বলেন, ওই জমির বিষয়টি নিয়ে সালিশ হয়েছে। ওই ২২ শতক জমির রেকর্ড রয়েছে সিরাজুল ইসলামের। সিরাজুল ইসলাম ও তার প্রতিপক্ষের মধ্যে দ্ব›দ্ব নিরসনে এলাকার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সালিশ করেছেন। কিন্তু বিষয়টি স্থানীয় ভাবে মিমাংসা না হওয়ায় সিরাজুল ইসলাম আইনের আশ্রয় নিয়েছেন।