নিজস্ব প্রতিবেদক,
গতকাল শনিবার (১৪ ডিসেম্বর,২০২৪) ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটির সাগর রুনি হলে মাস্তুল ফাউন্ডেশন উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে আলোচনা সভা। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানে রাজপথে থাকা সাহসী সাংবাদিকবৃন্দ। শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন শফিকুল আলম, প্রেস সেক্রেটারি, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি তার বক্তব্যে মাস্তুল ফাউন্ডেশন কে এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন এর জন্য সাধুবাদ জানান। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আমরা এমন এক বাংলাদেশ চাই যেখানে সাংবাদিকরা দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে আর যেন আহত না হয় এ জন্য তিনি সকল গণমাধ্যম নেতৃবৃন্দ ও মালিকদের আহ্ববান জানান সকল সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে মাঠে পাঠানো।
অনুষ্ঠানটিতে জুলাই অভ্যুত্থান রাজপথে থাকা সাংবাদিকরা তাদের জীবনের মর্মান্তিক ঘটনার স্মৃতিচারণে তাদের অব্যক্ত অনুভূতি প্রকাশ করে।
অনুষ্ঠানে সাহসী যোদ্ধা হিসাবে সম্মাননা পেয়েছেন ১৩ জন এবং উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গ নাসির উদ্দিন সোয়েব, সিনিয়র রিপোর্টার, দৈনিক সংগ্রাম, হাসান মাহমুদ , রিপোর্টার, দেশ টিভি, সুমন্ত চক্রবর্তী- স্টাফ ফটো সাংবাদিক, দৈনিক জণকন্ঠ। আরেফিন ইমন- সিনিয়র মোবাইল জার্নালিস্ট, বাংলাদেশ টাইমস, আক্তার হাবিব, সাংবাদিক, চ্যানেল আই, রহমতউল্লাহ, সাংবাদিক, এস এ টিভি, মনজুরুল করিম- ফটো সাংবাদিক, দৈনিক কালের কণ্ঠ, মোহাম্মদ নাইম, রিপোর্টার, খবর সংযোগ। নাদিয়া শারমিন, সিনিয়র রিপোর্টার, একাত্তর টিভি, মো. হাসান বিশ্বাস, ক্যামেরাম্যান বার্তা, মাই টিভি, শফিকুল ইসলাম জুয়েল, স্টাফ রিপোর্টার, বার্তা বাজার, আকরাম হোসেন, লিড মেজো রিপোর্টার, দৈনিক কালবেলা, ইসমাইল হোসেন জনি, সিনিয়র ভিডিও জার্নালিস্ট, যমুনা টেলিভিশন।
মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক কাজী রিয়াজ রহমান তার বক্তব্যে বলেন, মাস্তুল ফাউন্ডেশন একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান। মাস্তুল ফাউন্ডেশনের মূল লক্ষ্য সমাজের উন্নয়নে কাজ করা আর এরই এক অংশ হিসাবে জুলাই আহত ছাত্র জনতাদের নিয়ে কাজ করতে করতে হঠাৎ মনে হয় এই অভ্যুত্থানে ছাত্রজনতার পাশাপাশি ভূমিকা রেখেছে গণমাধ্যম সমাজ। আর তাই এই আয়োজন। আমি অত্যন্ত আনন্দিত আমার এই ক্ষুদ্র চেষ্টায় সকল সাংবাদিক ভাই বোনদের সাথে পেয়ে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয় । এবং অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র প্রেস সেক্রেটারি, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা আহমেদ ফয়েজ, আবু সালেহ আকন- সভাপতি, ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটি, মাইনুল হাসান সোহেল, সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটি, রফিক মোহাম্মদ দৈনিক ইনকিলাব এবং অন্যান্য।
মাস্তুল ফাউন্ডেশন ২০১২ সালে তার পথযাত্রা শুরু করে এবং তাদের বহুমুখী সমাজসেবামূলক কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে নিজস্ব স্কুল, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও বৃদ্ধ আশ্রম যেখানে শতাধিক পিতামাতাহীন অনাথ/এতিম শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধ- বৃদ্ধা বসবাস করেন। এর বাহিরে কয়েক জেলায় প্রজেক্ট স্কুলগুলোতে হাজারের অধিক সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের সকল শিক্ষার উপকরণ দেয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পুষ্টিকর খাবার, শিশু অধিকার, মৌলিক চাহিদা নিশ্চয়তা করা হচ্ছে। এছাড়া চিকিৎসা খাতে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে ‘মাস্তুল এইড’ প্রকল্পের মাধ্যমে অর্ধশতাধিকের অধিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অসচ্ছল পঙ্গুত্ববরণকারী রোগীদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি হুইলচেয়ার ও কৃত্রিম পা দিয়ে স্বাবলম্বী করছে। মাস্তুল ফাউন্ডেশনের রয়েছে সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র যার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষম করে তোলা হচ্ছে। এর বাহিরে যাকাত স্বাবলম্বী প্রজেক্টের মাধ্যমে ১০০০ জনের বেশি মানুষকে স্বাবলম্বী করা হয়েছে। মাস্তুলের প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে দাফন-কাফন সেবা প্রজেক্ট, যার মাধ্যমে করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৩০০০ এর অধিক লাশ দাফন হয়েছে। রয়েছে মাস্তুল মেহমানখানা, যেখান থেকে শতাধিক অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষের একবেলা পেট পুড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা হয়।