ওয়াকিফ নুর রাইম ,নিজস্ব প্রতিবেদক
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)তে জাতীয়তাবাদী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্যোগে পবিত্র রমজান মাসের তাৎপর্য বিষয়ক আলোচনা, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেল ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কনফারেন্স রুমে উক্ত ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. আমিনুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বানিজ্য মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন চেীধুরী। ইফতার মাহফিলে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন পবিপ্রবি’র মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম হেমায়েত জাহান, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউট্যাব পবিপ্রবি শাখার সভাপতি ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ মামুন অর রশিদ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পবিপ্রবির কৃষি অনুষদের সিনিয়র অধ্যাপক ড. মোঃ দেলোয়ার হোসেন, বিবিএ অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক বদিউজ্জামান, আইন ও ভুমি প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোঃ জামাল হোসেন, পোস্ট গ্রাজুয়েট স্ট্যাডিজ এর ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, অধ্যাপক ড. মোঃ আবু ইউসুফ, জনসংযোগ বিভাগের সিনিয়র উপপরিচালক মোঃ মাহফুজুর রহমান সবুজ, সহকারী অধ্যাপক ড. এবিএম সাইফুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবুবকর সিদ্দিক, হাচিব মোহাম্মদ তুষার, সহকারী রেজিস্ট্রার মাহমুদ আল জামান এবং কর্মচারী মোঃ মোশারেফ হোসেন প্রমুখ।
জনসংযোগ বিভাগের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর মোঃ মাহফুজুর রহমান সবুজ বলেন, বিগত আওয়ামী সরকারের ১৭ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য, ভুয়া বিল ভাউচার এর মাধ্যমে শত কোটি টাকা লুট করেছে। তিনি অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য ও টেন্ডার বাণিজ্য তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান। বিগত দিনের দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে কিন্তু সেটা যেন ফ্রিজবন্ধী হয়ে না যায় সেজন্য কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে তদন্তের কার্যক্রম সমাপ্ত করার দাবী জানান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আলতাফ হোসেন চৌধুরীর নিরলস ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পবিপ্রবি পুর্নাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে তাই আমি তাদেরকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা। বিশেষ অতিথি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম হেমায়েত জাহান বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত রয়েছে। বিএনপি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা, মামলা ও নির্যাতন করে দলকে ধংস করতে চেয়েছিল কিন্তু তাদের সে আশা পুরণ হয়নি। তিনি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহবান জানান।
প্রধান অতিথি এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন চেীধুরী বলেন, বিগত আওয়ামীলীগ সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধংস করে দিয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে নকলের মহোৎসব চলছিল। তাদের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধর্ষনের সেঞ্চুরী উৎসব পালন করেছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, খুন এখন নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা। অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি জনজীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে। নির্বাচিত সরকার ছাড়া এ ধরণের পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ কোনো ক্রমেই সম্ভব নয়। তিনি অবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক পবিপ্রবি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম তার বক্তব্যে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিসহ সকল অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রম ও ত্যাগের প্রশংসা করেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্নত মেধা বিকাশের কেন্দ্রে পরিণত করতে সহায়তা করেছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির আহ্বান জানান এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে তাদের অবদানের প্রশংসা করেন। এ ধরনের অনুষ্ঠান কর্মজীবীদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ ও সামাজিক বন্ধন শক্তিশালী করতে সহায়তা করে।
আলোচনা সভার শুরুতে পবিপ্রবির উপাচার্যের জন্য এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরী চায়না থেকে সুন্দর ফুলের ছবি সম্বলিত একটি ওয়ালমেট/ চিত্র কর্ম নিয়ে আসে এবং সেটি উপাচার্যকে দেয়ায় উপাচার্য উপহারটি আলতাফ হোসেন চৌধুরীর কাছ থেকে গ্রহন করে কৃতজ্ঞতা স্বরুপ অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, “আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরী স্যারের প্রতি, যিনি চায়না থেকে আমার জন্য এই চমৎকার ফুলের ছবি সম্বলিত ওয়ালমেট/চিত্রকর্মটি উপহার হিসেবে নিয়ে এসেছেন। এটি শুধু একটি উপহার নয়, বরং এটি তাঁর আন্তরিকতা, সৌন্দর্যবোধ ও মহৎ হৃদয়ের পরিচায়ক। তাঁর এই সৌজন্যতা ও শুভেচ্ছা আমাকে অভিভূত করেছে। আমি তাঁর সুস্বাস্থ্য ও সফলতা কামনা করছি এবং আমাদের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা রাখছি।