ডাকসু নির্বাচন ঈদুল আজহার পরে

মোহাম্মদ ফাইজুল্লাহ ঢাকা সিটি রিপোর্টার

মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের গণতান্ত্রিক সকল আন্দোলনের সূতিকাগার হিসেবে কাজ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও দেশের দ্বিতীয় সংসদ হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধিকার আন্দোলন এবং স্বাধীনতার আন্দোলন সহ—সব আন্দোলনেই ডাকসু নেতৃত্ব দিয়েছে। একইসাথে রাজনীতিবিদ তৈরির কারখানা হিসেবেও দেশের দ্বিতীয় এই সংসদের ভূমিকা অতিশয় অপরিসীম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনও এই নির্বাচন আয়োজন নিয়ে ইতিবাচক। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর ডিসেম্বর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের কাজ শুরু করেছে। সর্বশেষ গেল সপ্তাহে ডাকসু নির্বাচনের টাইমলাইন ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে নির্বাচন ঠিক কবে হবে তা সুনির্দিষ্ট করে না জানালেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বলছে, আসন্ন মে মাসের মাঝামাঝিতে ডাকসু নির্বাচনের কমিশন গঠন করা হবে। অতঃপর তফশিল ঘোষণা করে ঐ মাসের শেষে কিংবা আগামী জুনে অর্থাৎ ঈদুল আজহার পর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ডাকসু নির্বাচনের আয়োজন করবে বর্তমান প্রশাসন। এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজনে বদ্ধপরিকর আমরা।বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ পর্যন্ত মোট আটবার অনুষ্ঠিত হয়েছে ডাকসু নির্বাচন।

সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন হয় ২০১৯ সালের ১১ মার্চে। অবশ্য ১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুসারে, প্রতি বছর ডাকসু নির্বাচন হওয়ার কথা। নির্বাচনের মাধ্যমে ডাকসু মনোনীত পাঁচ শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেটের সদস্য হন। তারা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা ও সুযোগের বিষয় তুলে ধরেন সরাসরি সিনেটে। তবে নিয়মিত নির্বাচন না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে থাকছে না শিক্ষার্থীদের কার্যকরী প্রতিনিধিত্ব।

ডাকসুর সর্বশেষ কমিটির মেয়াদ শেষ হয় গত ২০২০ সালের মার্চে। এরপর নানা প্রতিকূলতায় আটকে যায় ডাকসু নির্বাচন। কিন্তু বর্তমানে সে পরিস্থিতি একেবারেই পরিবর্তন হয়ে গেছে। গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে এই নির্বাচন আয়োজন নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়।

এ নিয়ে ক্যাম্পাসে নানা কর্মসূচিও পালন করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩৭ বার। এর মধ্যে ২৯ বারই হয়েছে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের ৫০ বছরে। স্বাধীন দেশে ৫৩ বছরে মাত্র ৮ বার ভোট দেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *