মোঃ জাহিদুল ইসলাম (গাজীপুর প্রতিনিধি)
সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে আলোচিত একটি ঘটনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। একটি টেলিভিশন চ্যানেলের উপস্থাপিকা ও দুই সহকর্মীকে চাকরিচ্যুত করার ঘটনায় নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন হাসনাত নামের এক ব্যক্তি। গালি দেয়ার স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়িয়ে নিজেকে ‘হিরো’ বানানোর চেষ্টা করলেও, অতীত কর্মকাণ্ডের কারণে তার দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে এসেছে।
গালি দেয়ার স্বাধীনতার নামে নাটক!
একটি লাইভ টেলিভিশন অনুষ্ঠানে এক উপস্থাপিকা ‘শু*য়োর’ বলে গালি দিয়েছিলেন। এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলে তাকে এবং আরও দুইজন সহকর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়। কিন্তু এরপরই হাসনাত ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে দাবি করেন, চাকরিচ্যুতদের ফিরিয়ে দিতে হবে এবং গালি দেয়ার স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। এতে অনেকে হতবাক হয়ে যান—কারণ, কিছুদিন আগেও তিনিই সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুত করতে প্রভাব খাটিয়েছিলেন!
সময়ের অফিসে হাসনাতের ‘শক্তির প্রদর্শনী’
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, কিছুদিন আগে সময় টিভির অফিসে গিয়ে হাসনাত একটি তালিকা ধরিয়ে দেন। তার দাবি অনুযায়ী, টিভির কয়েকজন কর্মীকে ‘কারণ ছাড়াই’ চাকরিচ্যুত করা হয়। সেদিন পুরো অফিসে উত্তেজনা তৈরি করেছিলেন তিনি, যার ফলে সাংবাদিকরা ভীত হয়ে পড়েছিলেন।
শুধু সময় টিভিই নয়, বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর তার হুমকি ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে। সাংবাদিকদের কাজ করতে বাধা দেওয়া, তাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা, এমনকি পছন্দ না হলে সরিয়ে দেয়ার জন্য চাপে রাখা—এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন হাসনাত ও তার সহযোগীরা। অথচ, এখন তিনি গালি দেয়ার স্বাধীনতার পক্ষের ‘সংগ্রামী’ সেজেছেন!
হাসনাতের দ্বিচারিতা উন্মোচিত
গণমাধ্যমকর্মীদের একাংশের মতে, হাসনাতের কর্মকাণ্ড থেকে বোঝা যায়, তিনি জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। যখন সুবিধা পান, তখন চাকরিচ্যুতির জন্য তদবির করেন, আবার যখন জনমত নিজের পক্ষে নেওয়ার প্রয়োজন হয়, তখন ‘গণতন্ত্রের’ বুলি আওড়ান।
উপস্থাপিকা হয়তো মুখ ফুটে একবার বলে ফেলেছেন, কিন্তু আসল ঘটনা হলো—অনেক সাংবাদিকের মধ্যেই হাসনাতের ব্যাপারে একই ধারণা জন্মেছে। তিনি যা প্রচার করছেন, সেটি কি আদৌ তার নিজের বিশ্বাস? নাকি এটি শুধু নিজের স্বার্থে তৈরি করা আরেকটি নাটক?
সাধারণ মানুষ ধীরে ধীরে তার দ্বিচারিতা বুঝতে শুরু করেছে। যারা সত্যিই বাকস্বাধীনতা এবং সাংবাদিকতার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন, তারা হাসনাতের এই ‘সুবিধাবাদী নাটকের’ বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছেন। এখন প্রশ্ন একটাই—এই ভণ্ডামি আর কতদিন চলবে?