শায়লা আক্তার মিম :
১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লক্ষ শহিদের তাজা রক্তের বিনিময়ে এবং ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৬ই ডিসেম্বর অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশ। এত ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে আবারো যখন ফ্যাসিবাদের আগ্রাসন আর জুলুমের চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়, ঠিক তখনই ২০২৪ সালে, দীর্ঘ ৫৩ বছর পর, আবারো এদেশের রাজপথ রঞ্জিত হওয়া ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে।
দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরাচারী হাসিনা শাসনামলে এদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব যখন বৈষম্যের জাঁতাকলে পিষ্ট, ঠিক তখনই ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট) স্বৈরাচারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনের ইতি ঘটে এবং বাংলাদেশ ২.০ এর রূপরেখা বাস্তবায়িত হয়।
স্বৈরশাসনের পতন শুধু একটি রাজনৈতিক পরিবর্তন ছিল না, এটি ছিল গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম।
জনগণের ঐক্য, রাজনৈতিক সচেতনতা এবং গণতন্ত্রের প্রতি ভালোবাসা আবারও প্রমাণিত হয়। এটি আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।
ডিসেম্বরের বিজয় এবং জুলাইয়ের আন্দোলন উভয়ই আমাদের জাতীয় জীবনে গর্বের প্রতীক। ১৯৭১ সালে যেমন আমরা জাতীয়ভাবে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, তেমনি ২০২৪ সালে আমরা গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলাম। এই দুটি বিজয় আমাদের শিখিয়েছে যে, সংগ্রাম ছাড়া কোনো অর্জন সম্ভব নয়।
ডিসেম্বরের বিজয় আমাদের স্বাধীন জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়ানোর শিক্ষা দেয়, আর জুলাইয়ের গণতান্ত্রিক বিজয় আমাদের গণতন্ত্র এবং অধিকার রক্ষার সংগ্রামে উৎসাহিত করে। এই দুটি মুহূর্ত আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, একটি জাতি যখন ঐক্যবদ্ধ হয়, তখন কোনো শক্তিই তাকে থামাতে পারে না।
বিজয়ের এই আনন্দময় মুহূর্তগুলো আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায় নতুন ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য। তাই, আমরা জুলাই ও ডিসেম্বরের এই বিজয়ের চেতনায় এগিয়ে চলি, একটি সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে।